Sunday, 20 June 2021
রীঁ মা নলাটেশ্বরী
রামেশ্বরের দ্বাদশলিঙ্গের মন্দির
মেদিনীপুর (বর্তমান ঝাড়গ্রাম) জেলার নয়াগ্রাম থানার দেউলবাড় গ্রামে মন্দিরটি অবস্থিত। সুবর্ণরেখা নদীর একেবারে পাড়ের উপর প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে, নদীপৃষ্ঠ থেকে ১৫০ মিটার উচ্চতায় জঙ্গলাকীর্ণ জন বিরল স্থানে ওড়িষি ভাষ্কর্যে মাকড়া পাথরে নির্মিত এই প্রাচীন শিব মন্দির। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে একসঙ্গে বারোটি শিবলিঙ্গ। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৩৪ লখ্খ টাকা ব্যয়ে মন্দিরটিকে সুসজ্জিত করেছে।
রোহিনী নিকটে বারাজীত মহাস্থান।
রাতে সীতা-রাম-লখ্ণ কৈলা বিশ্রাম।।
দুয়াদশ লিঙ্গ রামেশ্বর শম্ভুবর।
রঘুবঙশ কুলচন্দ্র পূজিলা বিস্তর।।
সপ্তদশ শতাব্দীতে ১৬৫৫ সালের মধ্যে রচিত "শ্রী শ্রীরসিকমঙ্গল" নামক জীবনীকাব্যে রামেশ্বর শিবের উল্লেখ আছে। এর বর্ননায় দেখা যায় যে রোহিনীর কাছে বারাজিত নামক স্থানে দ্বাদশলিঙ্গের অবস্থান। রামেশ্বরের কাছে বনের মধ্যে তপোবন নামে একটি মনরোম স্থান বাল্মীকির আশ্রম রুপে পরিচিত। সীতা-রাম-লখ্ন এই তপোবনে বাল্মীকির আশ্রমে বিশ্রাম গ্রহনকালে যে শিবলিঙ্গকে পূজা করেছিলেন, সেই রাম পূজিত শিবের নাম রামেশ্বর শিব।
পুরাতত্ত্ব গবেষকদের একাংশের মতে, একাদশ-দ্বাদশ শতকে ওড়িষার চোল গঙ্গদেবের রাজাদের আমলে মন্দিরটি তৈরি হয়। এই মন্দিরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের প্রথম কিরণ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে চারপাশে আলোকিত করে তোলে।
একদিন ভগবান বিশ্বকর্মাকে ডেকে এক রাত্রির মধ্যে বাল্মীকির তপোবনের কাছে পুরী নির্মাণের আদেশ দিলেন___ মানুষ যাতে না যানতে পারে এমনভাবে পুরী তৈরি করতে হবে সকলের অগোচরে। তাই বিশ্বকর্মা রাত্রে মানুষ যখন ঘুমাচ্ছিলো তখন এখানে এসে স্থানীয় মাকড়া পাথর দিয়ে মন্দির গড়তে শুরু করেন। বাইরে থেকে ভালো ভালো পাথর এনে মন্দির নির্মাণ যেহেতু এক রাত্রে সম্ভব নয়, তাই স্থানীয় মাকড়া পাথর ব্যবহার করেছিলেন। মন্দিরের কাজ প্রায় শেষ করে প্রাচীরের কাজ শুরু করেছেন, এমন সময় শুনতে পেলেন যে চিড়াকুটিরা ঢেঁকিতে চিড়া কুটতে শুরু করেছে। বিশ্বকর্মা ভাবলেন, সকাল হয়ে গেছে, এবার লোকজন তাকে দেখে ফেলবে। ভয়ে তিনি মন্দিরের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে স্বর্গে ফিরে গেলেন। কিন্ত তিনি জানতেন না, চিড়াকুটিরা সকাল হওয়ার এক প্রহর আগে উঠে নিজের ঘরে চিড়া কুটে।
সুবর্ণরেখা তীরে রামেশ্বর শিব ।
সূর্য কিরণে দ্বাদশ লিঙ্গ স্নাত।।
মাকড়া পাথর জুরে কোন কারিগর।
গড়ে গেছে কাহিনী টিলার উপর। ।
স্বর্গে গিয়ে নিজের বোকামির জন্য ভগবানের কাছে বকুনি খেলেন। এরপরে তিনি কোনো ঝুকি না নিয়ে সমুদ্রের নীচে বসে তৈরী করেছিলেন পুরীর মন্দির। মন্দির নির্মাণ শেষ হলে সমুদ্রের জল সরে যায় এবং পুরীর মন্দির জেগে উঠে। দেউলবাড়ের অসমাপ্ত মন্দিরটি বিগ্রহহীন অবস্থায় পড়ে থাকে। রামচন্দ্র যখন সীতাকে দ্বিতীয়বার বনবাসে পাঠালেন, তখন সীতা এখানে এসে তপোবনে বাল্মীকির আশ্রমে ছিলেন। এই তপোবনেই লব ও কুশের জন্ম হয়েছিল। তিনি প্রতিদিন লবকুশকে তেল হলুদ মাখিয়ে একটি ঝণর্ণার জলে স্নান করতেন বলে সেই ঝর্ণার জল হলুদ হয়ে গেছে। তপোবনে একটি অর্ধ-চেরা শাল গাছ "সীতা দাঁতন" নামে পরিচিত। তপোবনে আছে একটি অনির্বাণ যঞ্জকুন্ড। প্রথা আছে, এই স্থান দিয়ে কেউ গেলে এক খন্ড কাঠ যঞ্জকুন্ড দিয়ে যেতে হয়। বনবাসে এসে বনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ সীতা স্বামী রামচন্দ্রের মঙ্গল কামনায় বিশ্বকর্মা নির্মিত অসমাপ্ত মন্দিরে শিবকে প্রকট হতে অনুরোধ করেন। সতী সাবিত্রী সীতার প্রার্থনায় শিব সেই অসমাপ্ত মন্দিরে দ্বাদশ লিঙ্গ রূপে প্রকট হলেন। সীতা প্রতিদিন স্বামী রামচন্দ্রের মঙ্গল কামনায় রামের ইষ্টদেবতা এই দ্বাদশ লিঙ্গ শিবকে পূজো করতেন বলে এর নাম রামেশ্বর শিব।
মন্দির থেকে সুবর্ণরেখার বুকে।
নেমে গেছে সারিবদ্ধ পাথর সোপান। ।
এই শিব স্থাপন করে সীতা।
পূজ্য পাঠ বন্দনা - এখন জনশ্রূতি।।
মন্দিরের গর্ভগৃহ, জগমোহন, ভোগমন্ডপ এবং নাটমন্দিরের নিচু প্রবেশদ্বার চারটি, সমান্তরাল ভাবে এক সরলরেখায় এমন ভাবে নির্মিত যাতে প্রভাতে সূর্যের আলো মন্দিরের গর্ভগৃহে সোজাসুজি প্রবেশ করতে পারে। মন্দিরের গর্ভগৃহে দ্বাদশ লিঙ্গ শিবের অবস্থান। গৌরীপীঠের অভ্যন্তরে কেবল শিব লিঙ্গের মাথাটি দেখা যায়। মূল লিঙ্গের উপরিতলে এগারোটি ছোট ছোট লিঙ্গ, কেন্দ্রে অবস্থিত একটি লিঙ্গকে বেষ্টন করে আছে।
মন্দিরের পিছনের দিকে ১০৮ টি পাথরের সিড়ি ধাপে ধাপে নেমে এসে শেষ হয়েছে একটি কুন্ডের পাশে। এটি কুন্ড পুকুর নামে পরিচিত। এই কুন্ডে সারা বছর জল থাকে। কুন্ডের গা ঘেঁষে একটি খাল বয়ে গিয়ে সুবর্ণরেখা নদীতে পড়েছে।
রামেশ্বরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে আমাবস্যার অন্ধকার রাতে এখানে টিলার নীচে নদীর তীরে মেলা বসে মাঘ মাসে শিবরাত্রি উপলক্ষে । এটা কম আশ্চর্যের নয়। এখানে এসে শিবের ব্রতচারিনীরা মন্দির চত্বরে প্রদীপ জ্বেলে রাত জাগেন। তাছাড়া অন্য মেলার মতোই হরেক দ্রব্যের দোকানে মেলা বিশাল আকার ধারণ করে। মেলাটির অন্যতম আকর্ষণ হল অ-আদিবাসীদের সঙ্গে আদিবাসী পুরুষ ও রমণীর বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহন। সারা রাত্রি ব্যাপী মেলায় আদিবাসী নৃত্য-গীত এবং সাঁওতালী যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। নয়াগ্রাম এলাকায় অন্য কোনো বড় মেলা না থাকায় সকল শ্রেণীর মানুষ যে এই মেলায় এক রাত্রির আনন্দের জন্য আসে, সে কথা নি:সংশয়ে বলা যায়। রামেশ্বরের শিবরাত্রীর মেলাটি এই এলাকার সাংস্কৃতিক মিলন-মিশ্রন ও সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
১) মন্দিরটি
২) মন্দিরের গায়েই ৪০০ বছর পুরনো কাঁঠাল গাছ! (গাছটি পূজিত হয়)
৩)৬ মাথা বিশিষ্ট কার্তিক ঠাকুর।(মন্দিরের গায়েই খোদাই করা)
৪)ম্যাকডা পাথরের থম্বি।
৫) সুবর্ণরেখা নদী
৬) শিব রাত্রির মেলা।
৭) শাল জঙ্গল
সড়কপথে কলকাতা থেকে NH 6 ( মুম্বাই-কলকাতা মহাসড়ক ) ধরে ঝাড়গ্রামে পৌচ্ছাতে সময় লাগে প্রায় চার ঘন্টা। ঝাড়গ্রাম থেকে গোপীবল্লভপুর ৪২ কিমি। গোপীবল্লভপুর থেকে জঙ্গলের পথ ধরে ২৩ কিমি এগোলেই দেউলবাড়ের রামেশ্বর শিব মন্দির।
এছাড়া হাওড়া থেকে খড়্গপুর স্টেশনে পৌচ্ছাতে এক্সপ্রেস/ লোকাল ট্রেন আছে। সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা ২৪ মিনিট। এখান থেকে সহজেই ঝাড়গ্রাম আসা যায়।
তপোবনে বাল্মীকির আশ্রম
বাল্মীকির আশ্রম ---- তপোবন
যে বনে মুনিঋষিরা তপস্যার জন্য বাস করতেন, সে বনই হলো তপোবন । তপোবন কোনোও নির্দিষ্ট জায়গার নাম নয়। তপস্যাসাধনের বনই হ'ল তপোবন। পুন্যভূমি ভারতবর্ষে কতই না আছে তপোবন। ভারতবর্ষ মুনিঋষিদের দেশ। যেখানেই সত্যদ্রষ্টা মুনিঋষিদের আশ্রম স্থাপিত হয়েছে বা পুন্যাত্মা মুনিঋষিদের বানী বর্ণিত হয়েছে, সেটিই তপোবন বলে নামকরন হয়েছে। এখানে যে তপোবনের কথা বলতে চলেছি _____ এ তপোবন রত্নাকর দস্যুর তপোবন। ভয় পাবার কিছু নেই। কেননা আজ কোনো দস্যুও নেই, আর সেজন্য লুটপাট হবারও কোনো ভয় নেই। তবে বনের মধ্যে , আপনার ভাগ্য যদি সুপ্রসন্ন থাকে , তবে হাতির পালের দেখা মিলতেও পারে। এ দেখে আপনি মজা পাবেন না ভয় পাবেন সেটি আপনার নিজস্ব ব্যাপার।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে প্রায় ৬৫ কিমি দূরে দেউলবাড় গ্রামে গেলে দেখতে পাবেন রামেশ্বর শিব মন্দির। সেই শিবমন্দির থেকে ৭ কিমি দক্ষিনে সুবর্ণরেখা নদীর ধারে গভীর জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে অপরূপ সুন্দর এক জায়গা ----- বাল্মীকির তপোবন। হাত বাড়ালেই সুবর্ণরেখা নদী। আর জঙ্গলের রূপকে তো এককথায় অপরূপ বলা যায়। খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম বা বেলদা থেকে কালো পিচের রাস্তা আর সবুজ শাল গাছের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কিংবা সবুজ জঙ্গল আর রঙ্গিন মোরামের রাস্তা ধরে চলতে চলতে আপনি কখন যে পৌচ্ছে যাবেন নিজেও বুঝতে পারবেন না। সড়কপথে চড়াই উতড়াই হলেও এ পথের শোভা আর তাজা অক্সিজেন পাওয়ার আনন্দ, আমার মনে হয়, আপনার চিরকাল মনে থাকবে।
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। আর বিশ্বাসই ভারতীয় সভ্যতার প্রানভোমরা। এই বিশ্বাসেই ভারতবর্ষের সর্বত্র রামায়ণ মহাভারতের অধিষ্ঠান। রামচন্দ্র, সীতা ও লক্ষনের সাথে বনবাসে যাওয়ার পথে বাল্মীকির তপোবনে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এখান থেকে পঞ্চবটী বনে গিয়ে কুটির তৈরি করে থাকলেন। রাবণ সেখান থেকে সীতাকে চুরি করে। সীতাকে রাবনের হাত থেকে উদ্ধার করে চৌদ্দ বছর পরে রাজ্যে ফিরে এসে রামচন্দ্র যখন রাজা হয়েছিলেন, তখন প্রজারা গর্ভবতী সীতার চরিত্রে সন্দেহ প্রকাশ করেন। রামচন্দ্র প্রজাদের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য সীতাকে পরিত্যাগ করেন। লক্ষণ সীতাকে পুনরায় অরন্যে বাল্মীকির তপোবনে রেখে আসেন। কিছুকাল পরে সীতার দুই জমজ সন্তান লব ও কুশ জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাল্মীকি মুনির কাছে সর্ব শাস্ত্র অধ্যয়ন করে এবং যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হন। এই সময় রামচন্দ্রের অশ্বমেধের ঘোড়া যখন এই স্থান দিয়ে যায়, তখন লব-কুশ সেই অশ্বকে ধরে রাখে । ফলে রামচন্দ্র ও তাঁর তিন ভাইয়ের সাথে তাদের প্রবল যুদ্ধ হয়। লব-কুশের কাছে তারা সকলেই পরাজিত হয়ে চেতনা হারান। খবর পেয়ে সীতা ছুটে আসেন এবং এসব দেখে কান্নাকাটি আরম্ভ করেন। সীতার কান্না শুনে বাল্মীকি মুনি আসেন ও মন্ত্রপুত জল ছিটিয়ে তাদের চেতনা ফেরান । লব-কুশকে অশ্বমেধের ঘোড়া ছেড়ে দিতে বলেন। বাল্মীকির কথায় লব-কুশ ঘোড়া ছেড়ে দেন।
সীতানালা নামে একটা ছোট অরন্য ঝর্ণা তিন দিক থেকে তপোবনকে ইউ-এর মতো ঘিরে রয়েছে। আর একদিকে সুবর্ণরেখা নদী। কথিত আছে, বনবাসে থাকার সময়ে সীতা এই নদীতে স্নান করতেন বলে এই নদীর নাম সীতানালা। তপোবনে ঢোকার জন্য খালের উপরে এখন কংক্রিটের সেতু হয়েছে। আগে কাঠের সেতু ছিল। সেতু পেরিয়ে একটু এগোলেই মহর্ষি বাল্মীকির সমাধি। সমাধির নিচ থেকে মাকড়া পাথর সাজিয়ে উড়িষ্যার রেখ দেউল রীতিতে একটি ছোট মন্দির চূড়া তৈরি করা হয়েছে। সমাধির উপরে একটি লম্বা-লম্বি চেরা শালগাছ রামধনুর মত দুপাশে মটি স্পর্শ করে আছে। এই শালগাছটির নাম হল সীতা দাঁতন। সীতা নাকি শাল দাঁতনে দাত মাজার পরে দাঁতন চিরে জিভ ছুলে ফেলে দিলে এই গাছের জন্ম হয় বলে এর নাম সীতা দাঁতন। সমাধির পাশেই একটা বেদির উপরে একটা হোমকুণ্ড আছে যার আগুন রাতদিন জ্বলতে থাকে। কেউ বলেন বাল্মীকির হোমকুণ্ড। আবার কেউ একে সীতাধুনি বলে সম্বোধন করেন। সীতার গর্ভে লব-কুশ জন্মানোর পর আঁতুড়ের পাশে সীতাদেবী শিশুদের উষ্ণতা প্রদানের জন্য এই ধুনি জ্বেলেছিলেন, তাই এটা সীতাধুনি নামে পরিচিত। নিয়ম হচ্ছে, এখানে যেই আসুক না কেন বন থেকে এক খন্ড কাঠ এনে এই ধুনিতে দিয়ে যেতে হয়।
উত্তরে সীতানালা আর দক্ষিণে সীতাকুন্ড থেকে নির্গত হলুদ জলের ঝর্ণা তপোবনকে বেস্টন করে একসঙ্গে মিলিত হয়ে চলে গেছে সুবর্ণরেখার দিকে। জনশ্রুতি, সীতা এখানে তেল হলুদ মাখিয়ে লব কুশকে নিয়মিত স্নান করাতেন বলে জলের রং হলদে হয়ে গিয়েছে। বাল্মীকির সমাধির পাশেই রয়েছে একটা ছোট্ট মন্দির যেখানে বাল্মীকি, রাম, লক্ষণ, সীতা, লব ও কুশের মূর্তি রয়েছে। একে সকলে বাল্মীকি মন্দির বলে। যেখানে লব-কুশ অশ্বমেধের ঘোড়া ধরেছিল তা এই আশ্রম থেকে প্রায় ৫ কিমি দুরে গভীর অরন্যের মধ্যে অবস্থিত। অরন্যের প্রবেশ পথের বাম দিকে একটি স্থানে একটা সিমেন্টের ঘোড়া তৈরি করে রাখা আছে। মনে হবে যেন এখানেই বাঁধা ছিল সেই অশ্বমেধের ঘোড়া। আশ্রমের একটু দূরেই সীতানালা পাশেই রয়েছে তিলক মাটির পাহাড়। সেখানে থেকে আপনি নিজের ইচ্ছামতন তিলক মাটি সংগ্রহ করতে পারেন। বাল্মীকি মন্দিরের কাছেই রয়েছে একটি মহাদেব মন্দির। আবার একটি বীর হনুমানের মন্দিরেরও নির্মাণের কাজ চলছে।
বাল্মীকি মন্দিরে রোজদিন অন্নভোগ হয়। যে কেউ মানসিক করে এখানে অন্নভোগ নিবেদন করতে পারেন। প্রতি পূর্ণিমায় এবং অষ্টমীতে মন্দিরে নাম সংকীর্তন হয়। মন্দির খোলা থাকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
শ্রদ্ধা, ভক্তি ও বিশ্বাস দিয়েই মানুষ পৃথিবীতে তীর্থ রচনা করে। রামায়ণ বর্ণিত বাল্মীকির তপোবনের সঙ্গে এই তপোবনের কোনো সম্পর্ক আছে কি নেই , তপোবন দর্শনের জন্য সেই বিতর্কে না যাওয়াই ভালো। কিন্ত এই স্থানের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যথার্থভাবেই প্রাচীন তপোবনের উপযুক্ত, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহই নেই।