Monday, 13 May 2019

পশ্চিম বর্ধমানের বৌদ্ধ স্তূপ, পশ্চিম বর্ধমান।

পশ্চিম বর্ধমানের বৌদ্ধ স্তুপ-----

বৌদ্ধধর্মের মহাযান শাখা থেকে কালচক্রযান , সহজযানের মতো শাখাগুলি বাঙলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রসার লাভ করে। তার সাক্ষ্য বহন করে বাংলার বৌদ্ধ স্তুপগুলির ধ্বংসাবশেষ। যেমন পশ্চিম বর্ধমানের ভরতপুর বৌদ্ধ স্তুপটি। দূর্গাপুরের অদূরে দামোদরের পারে ভরতপুর বৌদ্ধ স্তুপটি বেড়া দিয়ে " সঙরখিত এলাকা " ঘোষণা করেছে পুরাতত্ত্ব বিভাগ।

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বখন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বাসস্থান, ধর্ম শিক্ষা , ধর্মীয় আচার পালন ও ধ্যানের জায়গা হিসাবে বৌদ্ধ বিহার গুলি গড়ে ওঠে। সেগুলো ইট দিয়ে তৈরি ও কয়েক তলা পর্যন্ত উঁচু হতো। ভিতরে থাকতো উঠান, বারান্দা , মঞ্চ, উপাসনা গৃহ। মন্দিরের ভিতরে বুদ্ধ, বোধিসতত্ব অথবা বৌদ্ধ ধর্মের অন্য কোনোও দেবদেবীর মূর্তি থাকত। সাধারণত, গুপ্ত ও পালযুগে এমন বিহার গুলি বাঙলা, বিহারে তৈরি হয়। ভরতপুরে এখনও মাটির উপরে সে রকমই স্তূপের মাথা ‌দেখা যায়। ভরতপুরে ১৯৭১ ও ১৯৭৪ সালে দু দফায় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় খননকার্যে বৌদ্ধ স্তুপটির অস্তিত্ব জানান যায়। মেলে বৌদ্ধ ধর্মের নানা নিদর্শনও। তবে এর পরে চার দশক কেটে গেলেও আর খননকার্য হয়নি এলাকায়।

এটিই রাঢ় অঞ্চলে আবিষ্কৃত একমাত্র বৌদ্ধ স্তুপ। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙরখিত পুঁথিতে "তুলাখেত্র বর্ধমান স্তূপ" নামে এই স্তূপের উল্লেখ পাওয়া যায়। স্তূপটির আয়তন ১২.৭৫ মিটার × ১২.৭৫ মিটার। বর্গা কার আয়তনের ইট নির্মিত স্তুপটির চতুর্দিকে রয়েছে কারুকার্য। স্তুপের উপরের অংশ যথাক্রমে পাঁচটি পর্যায়ে বিভক্ত হয়েছে বলে এটিকে " পঞ্চ রথকৃতি স্থাপত্য " বলা হয়ে থাকে। এই স্তুপটির স্থাপত্য কৌশল ওড়িশার রত্ন গিরি স্তুপের অনুরূপ।

ভরতপুর গ্রামটি পানাগড় রেলস্টেশনের দখিন দিকে চার মাইল দূরে দামোদর নদের কাছে অবস্থিত। পুরাতত্ত্বিক নির্দশনটি প্রাচীন স্মারক তথা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থল রুপে ঘোষণা করা হলেও এটিকে ভ্রমণ কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ভরতপুর গুরুত্বপূর্ণ হয়েও একটি অবহেলিত গ্রাম হিসাবেই এক পাশে পড়ে রয়েছে।







1 comment: